১৬ বছর বয়সী দ্বিতীয় বর্ষের অ্যালেক্সিস বার্নি রয়্যাল ওক হাই স্কুলের স্কুল মনোবিজ্ঞানী ডঃ থমাস হারউডের তৈরি একটি শান্ত ঘরে তার পড়াশোনার কাজ করার জন্য একটি শান্ত জায়গা খুঁজে পায়। ঘরে রয়েছে নরম চেয়ার; বসতে কম্বল; এবং টিভি স্ক্রিনে প্রশান্তিদায়ক ছবি/Photo : Daniel Mears, The Detroit News
রয়েল ওক, ২ জুন : শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য চাহিদা যখন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি, তখনই মিশিগানের স্কুলগুলো স্কুল মনোবিজ্ঞানীর তীব্র সংকটে ভুগছে। নতুন এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, রাজ্যের বিদ্যালয়গুলোতে মনোবিজ্ঞানী-শিক্ষার্থী অনুপাত সুপারিশকৃত মাত্রার তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি।
মিশিগান স্কুল সেফটি অ্যান্ড মেন্টাল হেলথ কমিশনের ২৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন অনুসারে, রাজ্যের প্রতি ১,৪০০ শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র একজন স্কুল মনোবিজ্ঞানী রয়েছে। অথচ ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ স্কুল সাইকোলজিস্টস সুপারিশ করে প্রতি ৫০০ শিক্ষার্থীর জন্য একজন মনোবিজ্ঞানী থাকা উচিত।
বর্তমানে, মিশিগানে প্রায় ১,০০০ প্রশিক্ষিত স্কুল মনোবিজ্ঞানী রয়েছেন, যারা ১.৩৭ মিলিয়ন শিক্ষার্থীর মানসিক স্বাস্থ্যসেবা, আচরণগত মূল্যায়ন ও জরুরি পরিস্থিতিতে পরামর্শসহ নানা দায়িত্বে নিযুক্ত। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, প্রায় ২০০টি পদ এখনো খালি রয়েছে, যা সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে।
রয়েল ওক স্কুলের মনোবিজ্ঞানী হিলারি হারউড জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ এতটাই বেড়েছে যে একদিন সকাল ১১টার মধ্যেই ২৭ জন শিক্ষার্থী তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করছিল। তিনি বলেন, “সেই দিন আমার তিনজন শিক্ষার্থী তীব্র প্যানিক অ্যাটাকে ভুগছিল, এবং দুজন আত্মহত্যার চিন্তায় বিপর্যস্ত ছিল। এটা সত্যিই অনেক বেশি ছিল।”
অক্সফোর্ড হাই স্কুলে ২০২১ সালের মর্মান্তিক বন্দুক হামলা এবং কোভিড-পরবর্তী মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের প্রেক্ষিতে, গভর্নর গ্রেচেন হুইটমার ২০২২ সালের অক্টোবরে মিশিগান স্কুল সেফটি অ্যান্ড মেন্টাল হেলথ কমিশন গঠন করেন। এই কমিশনের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন স্কুলে নিরাপত্তা এবং মানসিক স্বাস্থ্যসেবার ঘাটতি স্পষ্ট করে তুলে ধরেছে।
কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, রাজ্য সরকারকে একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে যা শিক্ষার্থী-মনোবিজ্ঞানী অনুপাত উন্নত করবে, মানসিক স্বাস্থ্যসেবার অ্যাক্সেস বাড়াবে এবং প্রমাণভিত্তিক অনুশীলনে বিনিয়োগ নিশ্চিত করবে।
কমিশনের সভাপতি ডেভেডা জে. কোলবার্ট বলেন, “শিক্ষা নেতা হিসেবে, আমাদের ছাত্র ও শিক্ষকদের নিরাপত্তা এবং মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করাই সবচেয়ে বড় দায়িত্ব।” তিনি আরও বলেন, “কমিশন গঠনের মূল উদ্দেশ্য হলো রাজ্যজুড়ে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা।”
কমিশনের প্রতিবেদনে মানসিক স্বাস্থ্য তহবিলের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ১৭টি রাজ্যে তহবিল কাঠামোর মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের জন্য নির্দিষ্ট পদসংখ্যা বরাদ্দ রাখা হয়েছে — যার মধ্যে রয়েছে উত্তর ক্যারোলিনা, পশ্চিম ভার্জিনিয়া, টেনেসি ও ডেলাওয়্যার। এর বিপরীতে, মিশিগান রাজ্য অনুদান বা শ্রেণীবদ্ধ তহবিলের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যে বিনিয়োগ করলেও, তা নির্দিষ্টভাবে মানসিক স্বাস্থ্য পদের জন্য সংরক্ষিত নয়। প্রতি-শিক্ষার্থী ভিত্তিতে মানসিক স্বাস্থ্য ও স্কুল সুরক্ষার জন্য তহবিল বরাদ্দ থাকলেও, রাজ্য আইন অনুযায়ী সেগুলিকে নির্দিষ্ট কর্মী বা পদের জন্য সরাসরি চিহ্নিত করা হয় না," প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
গ্রেগ নয়েন, মারকুয়েট-আলজার রিজিওনাল এডুকেশনাল সার্ভিস এজেন্সির সুপারিনটেনডেন্ট এবং একজন প্রশিক্ষিত মনোবিজ্ঞানী বলেন, “যদি আমরা একাডেমিক পুনরুদ্ধার ও নিরাপত্তা নিয়ে সত্যিই চিন্তিত হই, তাহলে মিশিগানের প্রতিটি জেলায় মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবায় টেকসই বিনিয়োগ এবং নতুন মনোবিজ্ঞানী তৈরি করতেই হবে।” তিনি আরও বলেন, রাজ্যের উচিত বিকল্প লাইসেন্স প্রোগ্রাম চালু করা বা বিদ্যমান প্রশিক্ষণ উদ্যোগে আরও বিনিয়োগ করা, যেন এই ঘাটতি ধীরে ধীরে পূরণ করা যায়।
Source & Photo: http://detroitnews.com
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan